-->

10টি প্রযুক্তিগত জিনিস যা আপনি ভুল জানেন!




আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে টেকনোলজির ব্যবহার করছি সব টেকনোলজি আমাদের উপকারে আসে না। কিছু কিছু টেকনোলোজির আবিষ্কার আছে যা আমাদের পাগল বানাচ্ছে।আজকে আমরা টেকনোলজিকে নিয়ে কিছু সত্যের 10টি প্রযুক্তিগত জিনিস জানবো।


লোকেশন

আপনারা যদি আপনাদের ফোন উপর থেকে নিচে স্ক্রল করেন তখন দেখবেন লোকেশন নামে একটি অপশন রয়েছে। আপনাদের মনে হয় লোকেশন অন থাকলেই আপনাদের অবস্থান ট্র্যাক করা যায় আর অফ থাকলে করা যায় না। কিন্তু এটা আপনাদের ভুল ধারণা। লোকেশন অফ করার পরও আপনাদের অবস্থান ট্র্যাক করা যায় এমন কি এটা হচ্ছেও।এসব অবস্থান বিভিন্ন সার্ভারে পাঠানো হচ্ছে।



মোবাইলল্যাপটপপিসি গরম হয়ে যাওয়া


আপনাদের সবার একটা ধারণা রয়েছে এটা যে মোবাইল, ল্যাপটপ, পিসি এগুলো অনেকক্ষণ ব্যবহার করলে গরম হয়ে যায়। তখন আপনাদের মনে হয় এটা নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু এটা আপনাদের ভুল ধারণা এটা হয় না। আপনি যখন অনেকক্ষণ ধরে মোবাইল ব্যবহার করেন তখন আপনার মোবাইল গরম হয় না, গরম হয় আপনার মোবাইলের প্রসেসর। আর প্রসেসর গরম হয়ে গেলে আপনার ফোন হয়তো আস্তে আস্তে কাজ করবে কিন্তু আপনার ফোন নষ্ট হবে না এটা আমি গ্যারান্টিসহ বলছি।


মোবাইলের সিপিইউর মধ্যে যে চিপ থাকে সেটা একশো ডিগ্রি তাপমাত্রা সহ্য করতে পারবে। একশো ডিগ্রী সহ্য করা মানে হচ্ছে আপনার শরীরের কোন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ এতো বেশি তাপমাত্রা সহ্য করার ক্ষমতা রাখে না কিন্তু আপনার ফোন রাখে। তো এখানে ফোন নষ্ট হওয়ার কোনো প্রশ্নই থাকছে না।


কিন্তু মনে করেন মোবাইলে ব্যাটারি গরম হয়ে যাচ্ছে তাহলে আপনার মোবাইলে সমস্যা নিশ্চয়ই হবে।এর ফলে আপনার ফোন আস্তে আস্তে কাজ করবে। আর এজন্যই প্রসেসর এবং ব্যাটারি পাশাপাশি রাখেনা যাতে একটির ফলে আরেকটির কোনো ক্ষতি না হয়।



স্মার্টওয়াচ থেকে রেডিয়েশন বের হওয়া


সবার মনে হয় স্মার্টওয়াচ থেকে রেডিয়েশন বের হয়। ওই সময় বেশিরভাগ মানুষই মনে করে এটি আপনার ওয়াচের ক্ষতি করছে। কিন্তু এটা এরকম হয় না।


স্মার্টওয়াচ থেকে মাইক্রোওয়েভ বের হয়।এ মাইক্রোওয়েভ একটু ভিন্ন ধরনের। এটি আমাদের কোন সমস্যা সৃষ্টি করে না। যখন আপনার স্মার্টওয়াচটি গরম হয়ে যায় তখন আমাদের হাতে হালকা একটু গরম অনুভব হয় যা আমাদের অনেকের জন্য আরামপ্রদ নয়। এছাড়া স্মার্টফোনে আর কোন সমস্যা নেই।


 সোসিয়াল মিডিয়া অ্যাপগুলো কি আমাদের কথা শুনছে?


আমাদের অনেকের মনে হয় যে ফেসবুক, গুগল, ইনস্টাগ্রাম সহ এই সকল সোসিয়াল মিডিয়া অ্যাপ কি আমাদের কথা শুনছে? এগুলো কি নামে শুধু একটি অ্যাপ নাকি এটি একটি মানুষ?


আসলে বলতে গেলে এরা আসলেই কথা শুনছে। কিন্তু যখন আপনার ফোন বন্ধ থাকে তখন এরা শুনতে পাবে না। এখন এজন্য অ্যান্ড্রয়েড একটা ফিচার এনেছে।এই ফিচারটির কাজ হচ্ছে কোন অ্যাপ কি আপনার ফোনের মাইক্রোফোন থেকে আপনার কথা শুনছে কিনা।


আপনি যখন কোন প্লাটফর্মে কোন কিছু আপলোড করেন যেমন কোনো ভিডিও, কোনো ভয়েস। প্রতিটি প্লাটফর্ম আপনাকে তখন অ্যাড দেখায়।এটি একটি সাধারণ বিষয় এবং একটি কম জায়গাতেই ব্যবহার করা হয়।


এসএসডি এবং হার্ডড্রাইভ


 মনে করেন আপনার কাছে ২৫৬ জিবি এবং ১ টিবি স্টোরেজের অপশন আছে তাহলে আপনি এখানে এই দুটির মধ্যে কোনটাকে বেছে নিবেন। অনেকেই এসএসডি এবং হার্ডড্রাইভের মধ্যে যেকোনো একটিকে পছন্দ করে। এসএসডি হচ্ছে যার মধ্যে কম স্পেস রয়েছে। 


কিন্তু এটি সাধারণ হার্ডড্রাইভের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি দ্রুত চলে। এর কারণেই আপনার ল্যাপটপ এবং পিসির স্পিড মোবাইলের তুলনায় দ্রুত হয়।আপনি যদি হার্ডড্রাইভে খোলেন তাহলে এক মিনিটের মত লাগবে কিন্তু যদি আপনি এসএসডিতে খোলেন তাহলে পাঁচ বা দশ সেকেন্ডের মধ্যেই হয়ে যাবে।


এর সাথে সাথে এসএসডি তাড়াতাড়ি নষ্ট হতে অনেক সময় লাগে। এর ফলে আপনার হাত থেকে ল্যাপটপ বা পিসি পড়ে যায় বা নষ্ট হয়ে যায় তখন আপনার তথ্য হারানোর সম্ভাবনা অনেক কম থাকে।আর এজন্যই ২৫৬ জিবির এসএসডি বেছে নিলে আপনি লাভবান হবেন।



রিফ্রেশ


যত মানুষ পিসি বা ল্যাপটপ চালায় সেটায় রিফ্রেশ অপশন রয়েছে। আমরা যখন রিফ্রেশ করি তখন দেখবেন পুরো স্ক্রিনটা তাড়াতাড়ি অফ হয়ে অন হয়ে যায়।এর ফলে আমাদের মনে হয় ল্যাপটপ বা পিসিটি আগের তুলনায় একটু তাড়াতাড়ি কাজ করবে। কিন্তু এটা আপনাদের ভুল ধারণা। এরকম হয় না। 


এই রিফ্রেসের ফলে পিসি বা ল্যাপটপের কোন কিছু পরিবর্তন হয়েছে কিনা সেটা খুজে বের করে।এই রিফ্রেশ কারণে আপনার পিসি বা ল্যাপটপ আরো স্লো হয়ে যায়।


টরেন্ট ডাউনলোড

টরেন্ট ডাউনলোড করতে অনেকের ভয় লাগে।এটি হয় না।টরেন্ট ডাউনলোড করা আসলে লিগ্যাল সাইট।এটি আপনি চাইলেই ডাউনলোড করতে পারেন।


কিন্তু আপনি যদি টরেন্টের মাধ্যমে কোন একই জিনিস কপিরাইটের জন্য ডাউনলোড করেন তাহলে সেটা বেআইনি।


ব্যাটারি


 মনে করেন আপনি সুযোগ পেলেন একটি ফোন কিনার।আপনার কাছে পর্যাপ্ত টাকাও আছে।তখন আপনি ৪,৫০০ mAh ব্যাটারি বা ৫,০০০ mAh ব্যাটারির ফোন কিনতে পারবেন।এর মধ্যে আপনি কোনটি নিবেন?


আমাদের সবার মনে হয় ব্যাটারির সংখ্যা যত বেশি সেই মোবাইলের ব্যাটারি সবচেয়ে বেশি ভালো। এখন থেকে বেশিরভাগই চাবে ৫,০০০ mAh এর ব্যাটারির মোবাইল কিনবে। কিন্তু এটা আপনি ঠিক করছেন না। এই ৫,০০০ mAh ব্যাটারির মোবাইল ঠিক হবে না কেনার জন্য।


ব্যাটারি ৫০% নির্ভর করে ব্যাটারির ক্যাপসিটির উপর আর বাকি ৫০% নির্ভর করে এটি কিসের ভিতর ব্যবহার করা হচ্ছে।যদি ঐ সফটওয়্যারটি ভালো হয় তাহলে সেটা ৪,৫০০ mAh বা ৫,০০০ mAh এর ব্যাটারির যেটাই হোক তাতে কোনো সমস্যা করবে না।৪,৫০০ mAh ব্যাটারি ৫,০০০ mAh ব্যাটারির তুলনায় তিনগুণ বেশি চলতে পারবে।


যেমন: আইফোনের একটি ফোনের প্রসেসর ভালো কিন্তু সেটার ব্যাটারি ৩,৫০০ mAh এর ব্যাটারি হওয়ার পরও ৯-১০ ঘন্টা চলবে।এখানে কিছু বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে যে মোবাইলের স্পিকার কতটুকু ভালো, প্রসেসর কতটুকু ভালো,ডিসপ্লে কতটুকু বড় এই সব বিষয় ব্যাটারির উপর পরিবর্তন আনে।


ইন্টারনেট


ইন্টারনেট মানে আমাদের সবার মনে হয় আমাদের মাথার উপর দিয়ে একটি স্যাটেলাইট আছে সেটি আমাদের সিগন্যাল পাঠায়।এর ফলে আমরা ট্রেড ব্যবহার করতে পারি।কিন্তু এই ধারণাটি একেবারে সঠিক নয়।ইন্টারনেট আসলে বড় বড় তারের মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়।আর এই বড় বড় তার সমুদ্রের মধ্য দিয়ে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়।তারপর এগুলো একসাথে কানেক্ট হয়ে আমাদের ফোন, ল্যাপটপ, পিসিতে পৌঁছায়। 


এখান থেকে স্যাটেলাইট স্টেশন পর্যন্ত তো ওয়্যারলেস কিন্তু এরপর থেকে সব ওয়্যারযুক্ত থাকে।মনে করেন সমুদ্রের মধ্যে যদি কোনো কারণে তার ছিঁড়ে যায় তখন কি হবে? প্রথমত এই তার অনেক শক্ত করে তৈরি করা হয়েছে। শার্কও যদি কামড় দিয়ে ছিঁড়তে চায় শার্কের দাঁত ভেঙ্গে যাবে।এছাড়া কিছু তার ব্যাকআপ হিসেবে থাকে যদি যেকোনো একটি বা দুটি ছিঁড়ে যায় তারপরে এগুলো জোড়া লেগে যাবে এবং কাজ করবে।


ম্যাকের ল্যাপটপে ভাইরাস


অনেকের মনে হয় ম্যাকের ল্যাপটপে ভাইরাস থাকে না।আসলে এটা প্রথম আপনাদের সঠিক ধারণা।শুধু অ্যাপলের ল্যাপটপে নয় লিনাক্সেও যতগুলো জিনিস আছে সেগুলোতেও এরকম অবস্থা।আসলে লিনাক্স যেটা আপনার ল্যাপটপ বা মোবাইলে চলে এগুলোর উপর ভাইরাস আসে না।


ভাইরাস হচ্ছে এমন একটা জিনিস যা আপনার সিস্টেমকে অ্যাকসেস করে সবকিছু পরিবর্তন করতে পারবে। অ্যান্ড্রয়েড, আইওএসে আপনি নিজে সিস্টেম অ্যাকসেস করতে পারবেন না।তাহলে ভাইরাস আপনার কিছুই করতে পারবে না।


কিন্তু ম্যালওয়্যার সমস্যা করতে পারে।মনে করেন ফালতু অ্যাপ যেগুলো শুধু থাম্বেল দিয়ে রেখেছে মানুষ যাতে এগুলোতে ডুকে।অথবা কোনো সাইটে আপনি প্রবেশ করেছেন কিন্তু কোনো কাজ হয়নি এই সব কিছুতে ম্যালওয়্যার থাকতে পারে।




তো কেমন লেগেছে আপনাদের? এখন হয়তো মনে করছেন এত সময় ধরে তাহলে টেকনোলজি আমাদের সাথে মজা করছে। এখনই তাহলে আপনারা সাবধান হয়ে যান।সবাইকে আল্লাহ হাফেজ।